আজকে আব্বু একটা মেয়েকে পালিয়ে বিয়ে করে নিয়ে আসছে। এখনো সেই মেয়ের চাঁদ মুখটা পর্যন্ত দেখা হয় নি।
রাগে আমার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। বাবা এই বয়সে বিয়ে করবে ভাবতেও ঘৃনা হচ্ছে। এখন রাস্তায় বের হলেও বন্ধুরা আমাকে নিয়ে হাঁসি ঠাট্টা করবে। সন্ধায় ছাঁদে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম।
এদিকে সাদিয়াকেও কলের পর কল দিয়ে যাচ্ছি, সুইচ অফ দেখাচ্ছে। মাথায় থাকা এলোপাতারি রগ গুলু জেনো মুঁচর দিয়ে ওঠছে। আর কিছু ভাবতে পারছি না। ঠিক তখনই কেউ একজন ছাঁদে আসলো বুঝতে পারলাম।
আমি পিছনে ফিরতেই দেখি সাদিয়া লাল বেনারসি শাড়ি পরে দাড়িয়ে আছে। আমি ক্ষানিক অবাক হয়ে বললাম- তু তুমি এখানে?
সাদিয়া মুচকি হেঁসে বললো- আমার স্বামির বাসায় আমি আছি। তাতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে।
সাদিয়ার কথা শুনে বিস্ময়কর হয়ে বললাম- আ আরে আমি আবার তোমাকে বিয়ে করলাম কবে?
আমার কথা শুনে সাদিয়ার ঠোটের কোণে এক চিলতে হাঁসি নিয়ে বললো- তুমি আমাকে বিয়ে করতে যাবে কেনো? আমিইতো বিয়ে করেছি তোমার বাবাকে।
সাদিয়ার কথা শুনে কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমার বুকের মাঝে ধুক করে উঠা বিট টা যেনো থমকে গেলো।
আমি হাঁসি কান্যা মিস্রন চোখে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম- এ এই সাদিয়া, তু তুমি আ আমার সাথে মজা করছো তাই না।
সাদিয়া মুঁচকি হেসে বললো- আমি তোমার সাথে মজা করতে যাবো কেনো। তুমি হচ্ছো আমার ছেলের মতো, তোমার সাথে মজা করাটা কি আমার শোভা পাই বলো।
তখনই পিছন থেকে আব্বুর কন্ঠ শুনতে পেলাম।
আব্বু- কি হলো সাদিয়া, কার সাথে এতো কথা বলছো শুনি(পিছন থেকে সাদিয়াকে জরিয়ে ধরলো)
সাদিয়া ধীর কন্ঠে বললো- দেখো না তোমার ছেলে কিসব আজেবাজে কথা বলছে।
আমার কথা শুনে বাবা সাদিয়াকে ছেঁড়ে দিলো। আর বললো- কি কি বললো তোমাকে? তখন আমি আব্বুকে বললাম- বাবা তুমি কি সাদিয়াকে আগে থেকে চেনো?
বাবা বললো, 'হ্যা চিনি, সাদিয়ার সাথে আমি দীর্ঘ এক বছর রিলেশন করে তাকে বিয়ে করেছি। বাবার কথা শুনে আমি আর কোনো কথা বললাম না। আমার রুমে এসে শুয়ে শুয়ে ভাবছি, 'সাদিয়ার সাথে আমি রিলেশনে আছি পাঁচ বছর যাবত, আর এদিকে আব্বু কি না বলছে একবছর তারা রিলেশন করে।
সাদিয়া আমার সাথে এমন করলো কেনো? আমি তো তাকে নিজেন জিবনের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম। তারপরেও কেনো সে এমন করলো।
এমন সময় আমার রুমে বাবা প্রবেশ করলো। আর বললো- এই শুন তুই তোর আম্মুর সাথে বসে গল্প কর আমি বাজার থেকে আসি। বাসর ঘর সাজানোর ফুল-টুল নিয়ে আসি।
আমি কোনো কথা বলতে পারলাম না, 'নিজের অজান্তেই চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রুকণা বেরিয়ে গেলো। বাবা যাওয়ার পরপরই সাদিয়া আমার রুমে প্রবেশ করলো।
আমি সাদিয়ার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম- সাদিয়া তুমি মনে হয় আমার সাথে মজা করছো তাই না। প্লিজ এরকম fun করা বাদ দাও, আমি আর নিতে পারছি না। সাদিয়া হেসে বললো- আমি তো আগেও বলছি, যে আমি ফান করছি না। আমি কান্না করে দিয়ে বললাম, 'তুমি এমন কেন করলে হ্যা? আমি কি তোমাকে কম ভালোবাসতাম।
সাদিয়া অট্টো হাঁসিতে মেতে উঠলো আর বলতে লাগলো, ' তুই আমাকে ভালোবাসিস, আরে পাগলা আবেগ দিয়ে কি সংসার চলে। তুই আমাকে বিয়ে করে কি খাওয়াতি, কি আছে তোর? তোর বাবার অনেক টাকা আছে, তাই তাকে বিয়ে করেছি। আর তোর ভালোবাসা তোর কাছেই রাখ। যখন তোকে প্রতাদিন নিয়ম করে সকালে কল করতাম তখন তুই আমার সাথে এতোটা কথা বলতে চাইতি নি। তুই কলেজে গিয়ে অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলাই বাস্ত হয়ে পরতি। তখন তোর ভালোবাসা কোথাই যেতো হ্যা।
সাদিয়ার কথা শুনে আমি কান্না করে দিলাম। কারন কলেজে আমি অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলেছি বলতে। আমার এক ফ্রেন্ড আছে মাহি নাম, মাঝেমদ্যে তার সাথেই কথা বলেছি। আর এটা দেখে সাদিয়া আমার সাথে সবসময় খারাপ বাবহার করতো।
আমি কান্না করতে করতে বললাম- তাই বলে তুমি আমাকে এমন শাস্তি দিবে। তুমি নিজেও জানতে কলেজে যার সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলতাম সে আমার ফ্রেন্ড মাহি। আর এটাও জানতে যে তোমাকে ছাঁড়া আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না। আমার প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে তুমি মিসে আছো। তারপরেও কেনো করলে এমন? তখন সাদিয়া বললো- তোকে আমি আরো আগেও অনেকবার বলছি, যে কোনো একটা চাকরি কর। কিন্তু তুই আমার কথা শুনিস না। তুই শুধু সারাদিন ঘুরাঘারি করতি। এখন তোর নিজের দোষেই তুই আমাকে হারিয়েছিস।
আমাদের কথার মাঝে কেউ একজন আসলো? পিছনে তাকিয়ে দেখি বাবা দাঁড়িয়ে আছে। বাবাকে দেখে ভয় পেয়ে গেলাম কোনো কথা বললাম না। তখন বাবা বললো, 'তোদের সব কথা আমি শুনেছি, এখন তো আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, তাই আর কিছু করার নেই। আর তুই বিয়ে করে বউকে কি খাওয়াতি। এখন আর কিছু করার নেই।
যারা গল্প পরতে ভালবাসো ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট
দিয়ে পাশে থাকবেন তাহলে নেক্সট পর্ব গোলো
সবার আগে পেয়ে যাবেন ধন্যবাদ
তখন সাদিয়া বাবার হাত ধরে বললো- চলো তো এখান থেকে, আমাকে আবার বাসরঘর সাজাতে হবে।
সাদিয়া বাবা হাতটা ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো। আর এদিকে আমার বুকের ভেতর জেনো বাঁর বাঁর মুঁচর দিয়ে উঠছে। টাকাই কি দুনিয়ার সব? টাকা দিয়ে কি ভালোবাসা কিনা যাই? সাদিয়া কি তাহলে বাবাকে টাকার জন্য বিয়ে করেছে। সাদিয়া একসময় আমাকে ওয়াদা দিয়েছিলো, যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে আমার হাতটা ধরে রাখবে। যত বাদাই আসুক না কেনো সে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখবে। এটাই কি তার ওয়াদা?
আমি ছাঁদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আছি, আর ভাবছি, 'সেই ছোট্টকালে বাবা-মাকে হারিয়েছি। তারপর থেকে রাস্তায় ঠোকাই গিড়ি করতাম।
একদিন ক্ষুদার্ত অবস্তায় রাস্তার পাশে বসে কান্না করছিলাম। কারন সারাদিন পেটে কোনো খাবা ঝুটে নি। একটা দোকানে গিয়ে বলছিলাম, 'আঙ্কেল আমার খুব ক্ষুদা লাগছে, আমাকে একটা রুটি দিবেন। তখন সেই লোকটা বললো, 'দোকানের সামনে থেকে যা ছোটলোকের বাচ্চা। তখন আমি আবারো বললাম, 'দেন না আঙ্কেল একটা রুটি। কথাটা বলার পরপরই আমাকে লাতি মেরে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়েছে।
তাই পেটের ক্ষুদা নিয়ে কান্না করছি। তখন কেউ একজন আমার সামনে একটা গাড়ি দাঁড় করালো। কিছুক্ষ পর একজন লোক নামলো, সেই লোকটা আমাকে তার বাসায় নিয়ে যাই। এবং আমাকে নিজের সন্তানের মতো লালনপালন করে, একটা স্কুলেও ভর্তি করে দেই।
চলবে...
গল্প: অশ্রুঝরা সেই ডায়েরিটা
পর্ব : ০১
0 Comments