শোন মা..আমি যদি বিয়ে করি..ফারহান ভাইয়াকেই করবো...
১০বছর বয়সের আয়েশার মুখে এমন কথা শুনে বাড়ির সকলেই অবাক..
এতো ছোট মেয়ে এসব কি বলে..
ফারহান না হলেও আয়েশার থেকে ৮বছরের বড়..
আয়েশার বাবা তখন আয়েশাকে কাছে ডেকে বলে..
>কেনো মা..ফারহানকেই কেনো??
>জানো বাবাই ফারহান ভাইয়া আমায় কত্তো আদর করে..আমায় চকলেট, আইসক্রিম, আরো কত্তো কি কিনে দেয়..আমায় মজার মজার গল্প শোনায়..
>মা এই টুকু কাউকে বিয়ে করার জন্য যথেষ্ট নয়।
>আমি কিচ্ছু জানি নাহ..আমি যা বলেছি তাই..
আয়েশার ফেমেলি এতে বেশি কান দেয় নাহ... কারণ ফারহান সব দিকে এক্সপার্ট একটা ছেলে..
যেমন রুপ তেমনি তার গুণ..
ফারহান এইবার ইন্টার এক্সাম দিবে...আয়েশাদের নানুবাড়ির ফেমেলির ভাই-বোনদের মধ্যে ফারহান বড়...
সবাই প্রায় ফারহানের জন্য পাগল...
কিন্তু ছোট আয়েশার কথা কেউই কানে নিলো নাহ..
ছোট ভেবে বাদ দিলো..
.
আয়েশার যখন পনেরো বছর..এবং সে যখন ক্লাস ১০এ পরে..
তখনের কাহিনি..
.
আয়েশা ক্লাসে বসে আছে.. স্যার আসে নি..
তাই সব বান্ধুবীরা মিলে বাহিরে আড্ডা দিচ্ছে..
.
এমন সময় সায়মা বলে উঠলো..
.
এই তোরা নিজেদের নিজেদের পছন্দের হিরোর নাম বলতো..
.
তারপর সবাই বলা শুরু করলো..
.
>রানবির কাপুর..
>সাকিব খান..
>আফরিন নিশু..
.
এই আয়েশা তোর প্রিয় হিরো কে??
>ফারহান মুস্তাকবির নীল...
.
কি??এটা আবার কে??
>আমার ভাইয়া...আমার রিয়েল হিরো..
.
৫বছরের পরেও আয়েশার মন থেকে ফারহানের প্রতি ভালোবাসার একটুও কমতি হয় নি..
.
আয়েশা সেইদিন স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে..
.
বাড়িতে এসেই সে শোনে তারা আজ নানুবাড়িতে যাবে..অন্য সবাইও নাকি আসবে..
আয়েশা আনন্দে নাচতে থাকে..সবাই আসবে মানে ফারহান ভাইয়াও আসবে..যা আয়েশার জন্য অনেক খুশির..
.
আয়েশা ঘরে গিয়ে রেডি হয়..এবং তারা নানুবাড়িতে চলে যায়..
.
ফারহান এখন অনেক বড় হয়েছে...
.
আয়েশারা যখন যায় তখন সবাই অলরেডি নানুবাড়িতে ছিলো..
আয়েশা সেখানে যাওয়ার পরে কেনো যেনো আয়েশার চোখ বার বার ফারহানকে খুজছিলো..
.
ফারহান কোথায়...ফারহান কে একবার দেখার জন্য তার মন যেনো ব্যকুল হয়ে যাচ্ছিলো..
কিন্তু সে ফারহানকে পাচ্ছিলো নাহ..
.
এমন সময় পাশ থেকে আয়েশার কাজিন সামিহা বলে উঠে..
.
কিরে আয়েশা কাউকে খুজছিশ??
>না নাহ..না তো..
>এতো তুতলাচ্ছিশ কেনো??কিছু হয়েছে??
>না আপু..কিছুই হয় নি..
>সবে মাত্র এলি..একটু রেস্ট নে..
>হুম..
>রাতে ফারহান ভাইয়া সহ সবাই মিলে আমরা ছাদে আড্ডা দিবো নি..
>আচ্ছা..(ফারহানের নামটা শুনেই কেনো জানি আয়েশার অন্তরে মুচড় দিয়ে উঠলো..)
.
আয়েশা রুমে চলে গেলো..।
.
এখন সন্ধ্যা ৭টা বাজে..আয়েশার শুধু মনে হচ্ছে কখন রাত হবে..
.
কখন সে ফারহান ভাইয়াকে দেখবে তার..
.
একটু পর পর বালিশ উল্টোচ্ছে.. নিজে ঘুরছে আর ঘড়ি দেখছে..
.
তার মনে হচ্ছে যদি সে সময়টাকে নিজে বাড়িয়ে দিতে পারতো..
.
আয়েশার অপেক্ষা জেনো কমছেই নাহ...
.
এমন করতে করতে আয়েশা ঘুমিয়ে যায়..
.
আয়েশার ঘুম ভাংগে রাইসুল এর ডাকে..
রাইসুল আয়েশার মামাতো ভাই..
.
কিরে আপু..উঠবি নাহ??সবাই ছাদে অপেক্ষা করছে..
>আয়েশা যেনো বাক ফিরে পায়.. সে ধরফর করে উঠে যায়..
>আয়েশার এমন কান্ড দেখে রায়সুলও অবাক হয়..
.
যাই হোক আয়েশা মুখ ধুয়ে ছাদে যায়..
.
সেখানে গিয়েই জেনো সে প্রাণ ফিরে পায়..
তার সেই প্রিয় মানুষ..ফারহান ভাইয়া..
.
সে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ফারহানের দিকে..
.
আয়েশার সব কাজিনরা ছাদে ছিলো..
তারা দুই দল করে গানের কলি খেলছিলো..
.
আয়েশাও এক দলে যোগ দিলো..
.
সেখানে তখন গান গাচ্ছিলো ফারহান..
.
ফারহানের গান এর অক্ষর ছিলো ও..
.
ফারহান গাইতে শুরু করে..
>ও আমার বন্ধু গো..চির সাথি পথ চলার...তোমার জন্য..করেছি আমি মঞ্জিল ভালোবাসার..
ফারহানের গান শুনে আয়েশার যেনো মনে হচ্ছিলো ফারহান যেনো তার জন্যই গাইছে..
তাই ফারহানের গান শেষ না হতেই আয়েশা গেয়ে উঠে..
>রেহনা তু পাল পাল দিলকে পাছ..জুরি রাহে তুঝ ছে হার এক সাস...(সুর নিজেরা দিয়ে নিবেন যারা গান গুলো পারেন)
.
ফারহান আবার গাইতে শুরু করে..
>সাস নে তেরে.. সাস মিলে তো..মুঝে সাস আয়ে..মুঝে সাস আয়ে...
.
ফারহান এর গান শেষ না হতেই আয়শা আবার গেয়ে উঠে..
.
>এক্কে বারে ভালোবাসি আমি তোমায়..অনেক বেশি ভালো আমি তোমায়..ও আমার চির সাথি তুমি আমার..সারা জীবনি তুমি শুধু হবে আমায়ায়ার.....
.
আয়েযহার গান শুনে সবাই হু হু করব হেসে উঠে..কারণ আয়েশা নিজে থেকে বাজিয়ে গান বলছিলো..
.
সবার হাসির মাঝে ছেদ ঘটিয়ে ফারহানের ফোনে একটা ফোন, আসে..
.
আয়েশা যেহেতু ফারহানের পাশেই বসে ছিলো তাই সে দেখতে পেলো ফারহানের ফোনের স্ক্রিনে জানু নামে একটা নাম্বার ভেসে উঠেছে..
.
ফারহান ফোন রিসিভ করে একটু দূরে গিয়ে বলতে লাগলো...
.
>হে জানু বলো..
.
ফারহানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে আয়েশার যেনো দুনিয়ে উল্টে গেলো..
.
সে যেনো সহ্যই করতে পারে নি..
সে এক দৌড়ে ছাদ থেকে নেমে নিজের রুমে যায় এবং কাদতে থাকে..
.
তার কান্না যেনো থামছেই নাহ..তাই ফারহান ভাইয়া অন্য কারো হবে এটা সে মানতে রাজি না কোন ভাবেই..
.
সে কেদেই চলেছে কেদেই চলেছে..
.
হঠাৎ তার কাদে কে যেনো এসে হাত রাখে এবং আয়েশা পিছনে তাকায়..গল্পটি সবার আগে পরতে চাইলে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠাতে পারেন......"
.
#চলবে..
.
.
মোঃ রাকিবুল হাসান
পার্টঃ১
0 Comments